রাজু ছিল গ্রামের একজন সাধারণ পরিবারের ছেলে। বাবা হেমায়েত মিয়া একজন কৃষক, প্রতিদিন সকালে মাঠে চলে যেতেন কাজ করতে। মা গৃহিণী, সামান্য সংসার সামলাতেন ভালোবাসা আর মমতায়। রাজু ছোট থেকেই একটু আলাদা ছিল, যেমন ভদ্র, তেমনই দায়িত্ববান। পাড়ার সকলে তাকে “ভালো ছেলে” বলে ডাকত।
রাজু পড়াশোনায় ছিল খুব ভালো। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বাবার সাথে কিছুক্ষণ মাঠে কাজ করে তারপর স্কুলে যেত। স্কুল শেষে মায়ের কাজে সাহায্য করত। কখনও পাড়ার ছোটদের পড়াত, আবার কখনও মসজিদে গিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করত।
তবে শুধু পড়াশোনায় ভালো হলেই তো আদর্শ হওয়া যায় না! রাজু সবসময় সত্য বলত, কারো ক্ষতি করত না, আর সবসময় চেষ্টা করত অন্যদের সাহায্য করতে। একদিন স্কুলে তার বন্ধু শাকিল ক্লাসে না আসায় শিক্ষক তাকে জিজ্ঞেস করেন। রাজু জানায়, শাকিলের মা অসুস্থ, তাই সে তার পাশে আছে। শিক্ষক অবাক হয়ে যান—ছোট ছেলেটির মধ্যে কতটা মানবতা!
একবার গ্রামের একজন বৃদ্ধ চাচা রাস্তার ধারে পড়ে যান। অনেকেই পাশ কাটিয়ে চলে গেলেও রাজু তাকে নিজের কাঁধে ভর দিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেয়, ওষুধ এনে দেয়। সেই চাচা তখন বলেন, “তুই শুধু তোর বাবার নয়, এই গ্রামের গর্ব।”
বাবার সবসময় স্বপ্ন ছিল, রাজু যেন একদিন অফিসে কাজ করে, স্যুট পরে গ্রামের মাটি ছুঁয়ে শহরের গর্ব হয়। রাজু সেই স্বপ্নকে নিজের অঙ্গীকার বানিয়েছিল। দিন রাত পরিশ্রম করত। কলেজে ভর্তি হয়ে, শহরে গিয়ে বড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। হাজার কষ্টের মাঝেও সে হাল ছাড়েনি।
অবশেষে, একদিন খবর এলো—রাজু সরকারি চাকরিতে নির্বাচিত হয়েছে। গ্রামে ফিরে এলো স্যুট পরে, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে। বাবা-মা আনন্দে কাঁদলেন। রাজু মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে বলল, এই মাটিই আমার শক্তি।
রাজুর গল্প শুধু একটি সফলতার নয়, এটি একটি অনুপ্রেরণার গল্প। সে প্রমাণ করেছে, আদর্শ ছেলে হওয়া মানে শুধু ভালো ছাত্র হওয়া নয়, বরং একজন ভালো মানুষ হওয়া।
#আদর্শ_ছেলে
#বাংলা_গল্প
#অনুপ্রেরণামূলক_গল্প
#গ্রামের_ছেলের_সফলতা
#পারিবারিক_মূল্যবোধ
#বাংলাদেশী_ছেলের_গল্প
#ভালোবাসা_ও_মানবতা
#ছোট_থেকে_বড়_হওয়ার_গল্প