তানিয়া আর রায়হানের পরিচয় হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। শুরুটা ছিল একেবারে সাধারণ—“হাই”, “কেমন আছো” দিয়ে। ধীরে ধীরে তারা একে অপরের জীবনে এতটাই জড়িয়ে পড়ে যে সকাল, দুপুর, রাত—সবসময়ই একে অপরকে ছাড়া অসম্পূর্ণ মনে হতো।
রায়হান খুব যত্নশীল ছিল। প্রতিদিন সকালে মেসেজ দিয়ে ঘুম ভাঙানো, রাতে গান শোনানো, ভার্চুয়ালি একসঙ্গে সিনেমা দেখা—সবই চলত নিয়ম করে। তানিয়া বিশ্বাস করতে শুরু করে, এটাই বুঝি তার জীবনের সত্যিকারের ভালোবাসা।
কিছুদিন পর রায়হান দেখা করার প্রস্তাব দেয়। তানিয়া দ্বিধায় ছিল, তবুও বিশ্বাসের জায়গা থেকে রাজি হয়ে যায়। প্রথম দেখা হয় ঢাকার এক রেস্তোরাঁয়। রায়হান বাস্তবেও ঠিক তেমনই সুদর্শন ও স্মার্ট—তানিয়ার হৃদয়ে সে যেন রাজত্ব করে।
এরপর তাদের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। রায়হান প্রায়ই বলে, “তোমাকে ছাড়া জীবন কল্পনাও করি না।” তানিয়ার চোখে তখন ভবিষ্যতের স্বপ্ন—একসঙ্গে সংসার, সুখের জীবন।
কিন্তু ধীরে ধীরে রায়হান বদলে যেতে শুরু করে। কল রিসিভ না করা, উত্তর দিতে দেরি, হঠাৎ মুড অফ—সবই যেন অচেনা আচরণ হয়ে দাঁড়ায়। তানিয়া বারবার জিজ্ঞেস করলেও রায়হান এড়িয়ে যায়।
একদিন হঠাৎ করে তানিয়া রায়হানের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি ছবি দেখে চমকে যায়। সেখানে রায়হান একটি মেয়ের সঙ্গে আংটি বদলের ছবি পোস্ট করেছে—”Engaged to my love” ক্যাপশনসহ।
তানিয়া বিশ্বাস করতে পারছিল না। সমস্ত কিছু যেন মুহূর্তে ভেঙে পড়ল। ফোন করতেই রায়হান বলে, “দেখো, জীবনে চলার পথে অনেক ভুল হয়। তুমি সিরিয়াস হয়ে গেছো, আর আমি শুধু সময় কাটানোর জন্যই ছিলাম।”
এই একটা বাক্য তানিয়ার পৃথিবীকে অন্ধকার করে দেয়।
তানিয়া নিজেকে গুটিয়ে নেয়, অনেকদিন কারো সঙ্গে কথা বলে না। কিন্তু একসময় উপলব্ধি করে—ভালোবাসা মানে শুধু কারো জন্য কাঁদা নয়, বরং নিজের সম্মান রক্ষা করাও ভালোবাসা। সে নিজেকে গুছিয়ে নেয়, পড়ালেখায় মন দেয়, ক্যারিয়ার গড়ে তোলে।
একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে সে হাসে—“তুই পারিস, তুই ভালোবাসার নামে ছলনার শিকার হলেও নিজেকে শেষ করিসনি।”
#মিথ্যে_ভালোবাসা #ভাঙা_স্বপ্ন #বাংলা_গল্প #প্রেম_এবং_প্রতারণা #নারীর_জাগরণ #HeartbreakStory #LoveAndDeceit #BanglaLoveStory #মেয়েদের_অধিকার #নীলপরী_ব্লগ